আসাদুজ্জামান সম্রাট: [৪] ৭ জানুয়ারি রোববার দেশে যে সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তা মুলত: কোন দল সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসবে তা ঠিক করার জন্য। কারণ এ নির্বাচনে দেশের প্রধান দুই দলের একটি খালেদা জিয়ার বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ নিচ্ছে না। নেই বাম গণতান্ত্রিক জোটও, যারা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলছে। তাই প্রধান বিরোধী শক্তি নির্বাচনে না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংসদের তিন শত আসনের মধ্যে দুই শতাধিক আসন নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলে অনেকটা নিশ্চিত।

[৫] তাই এ নির্বাচনে কোন দল বিজয়ী হয়ে নতুন সরকার গঠন করবে, সেটা ভোটের আগেই সবাই জেনে গেছে। শেখ হাসিনা চার মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে পঞ্চম দফা শুরু করতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে সন্দেহের কোন সুযোগ নেই।

[৬] তবে বিরোধী দল কে হবে তা নিয়ে রয়েছে আলোচনা। কারণ বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের কোন প্রার্থী না দিলেও সেখানে রয়েছে আওয়ামী লীগের শক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাই জাতীয় পার্টি ২৬টি আসনে জয়ী না-ও হতে পারে। 

[৭] এবারের নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হতে পারেন। সেক্ষত্রে সরকার সমর্থিত নতুন দুটি দল তৃণমুল বিএনপি ও বিএনএম যদি জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দলে ভিড়িয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ে বেশি আসন পায় তাহলে বিরোধী দলের মর্যাদা হারাতে পারে বর্তমান বিরোধী দল। আর এ কারণেই বলা হচ্ছে , এটা হলো বিরোধী দল বেছে নেওয়ার নির্বাচন। 

[৮] তবে শেষ পর্যন্ত বহুদলীয় গণতন্ত্রের একটা প্রলেপ রাখতেই জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে। যেমনটি হয়েছিল ২০১৪ ও ২০১৮ সালে। ২০০৮ সালে মহাজোটের শরিক হিসেবে জাতীয় পার্টি ২৭টি আসন পেয়েছিল। 

[৯] ২০১৪ ও ২০১৮ সালের সংসদে তাদের আসন ছিল যথাক্রমে ৩৪ ও ২৬টি। এবার আসন কমবে না বাড়বে, সেটা নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতি দলের নির্দেশনার ওপর।

[১০] এদিকে ভোট ঠেকাতে ভোটারদেরকে ভোট দিতে না যাওয়ার আহবান জানিয়ে বিএনপি শনিবার ও রোববার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে। হরতালের সমর্থনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে শুক্রবার রাজধানীতে লাঠি মিছিল করে বের করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবৈধ নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে অবৈধ নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান।

[১১] আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে কোনো একতরফা নির্বাচন হচ্ছে না। দেশে যেটা হচ্ছে সেটা একতরফা বিরোধিতা। শুক্রবার দুপুরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপি প্রকাশ্যে নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে। তবে কোন অপশক্তি যেন নির্বাচনের দিন কোনো প্রকার হামলা-সহিংসতা করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। কাদের বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। ভালো আসন পাবো, তবে কত আসন পাবো সেটা আগেই অনুমান করা যাবে না। এবার সংসদে বিরোধীদল কে হবে তা নির্বাচনের পর বোঝা যাবে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। সম্পাদনা: ইকবাল খান